বিসিএস ও নন-ক্যাডার পরীক্ষা ফল ঘোষণা আটকে গেল

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তিনটি বিসিএস ও অন্তত ১০টি নন-ক্যাডার পরীক্ষা করোনাভাইরাসের কারণে আটকে গেল। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এসব পরীক্ষা নিতে চাইছে না সংস্থাটি। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এ সিদ্থান্ত নেয়া হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, মার্চ মাসে ৮ থেকে ১০টি নন-ক্যাডার পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল। এছাড়া বিসিএস পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন আছে। করোনায় আমাদের কাজে কিছুটা ধীরগতি এসেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা দ্রুততার সঙ্গে সব কাজ এগিয়ে নেব।
ড. সাদিক বলেন, পরীক্ষার ফলাফল তৈরির সঙ্গে খাতা দেখাসহ আরও কিছু কাজ আছে। এতে বাইরের বিশেষজ্ঞরা সম্পৃক্ত। অনেককেই পিএসসিতে আসা-যাওয়া করতে হয়। আমরা তাদের কাউকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। তাই একটু সময় নিতে হচ্ছে। বাস্তবতা সবাইকে মানতে হবে।
গত ২৬ মার্চ দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনা রোগী শনাক্ত হয়।
এরপর ১৬ মার্চ এক ঘোষণায় পিএসসি চলমান সব পরীক্ষা ১৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় স্থগিতাদেশ আর প্রত্যাহার করা হয়নি। তবে বৃহত্তর স্বার্থে সংস্থাটি ঝুঁকি নিয়েই ডাক্তার ও সিনিয়র নার্স নিয়োগের সুপারিশ করেছে।
বর্তমানে তিনটি বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রম নিয়ে এগোচ্ছে পিএসসি। এগুলো হচ্ছে- ৩৮, ৪০ ও ৪১তম বিসিএস। ৩৮তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের কথা মার্চের শেষদিকে। পিএসসির একজন সদস্য বলেন, ৩৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশের জন্য সবকিছুই প্রায় গুছিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু করোনায় আটকে গেছে ফলাফল ঘোষণা। বিদ্যমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর জন্য তিন লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন।
শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে পিএসসি প্রথমবারের মতো এই বিসিএসে দু’জন পরীক্ষক কর্তৃক উত্তরপত্র মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করে। আবার দু’জনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট নম্বরের হেরফের হলে তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়ে খাতা পুনঃমূল্যায়ন করার বিধানও রয়েছে। পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ফল প্রকাশের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষপর্যায়েই ছিল। করোনার প্রাদুর্ভাব না হলে আমরা মার্চের শেষ দিকে ফলাফল দিয়ে দিতে পারতাম। এখন অফিস পুরোদমে চালু না হওয়া পর্যন্ত প্রার্থীদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
৩৯তম ছিল বিশেষ বিসিএস। এই বিসিএসের মাধ্যমে ডাক্তার নিয়োগ করা হয়। আর ৪০তম সাধারণ বিসিএস। গত বছরের মে মাসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নিয়ে ইতোমধ্যে এই বিসিএসের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ২০ হাজার ২৭৭ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়। তবে আবেদন করেছিলেন চার লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। এর আগে ২০১৮ সালের গত ১১ সেপ্টেম্বর ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। গত বছরের ডিসেম্বরে নেয়া হয় ৪১তম বিসিএসের প্রার্থীদের আবেদন। এই বিসিএসে মোট দুই হাজার ১৬৬ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দেয়া হবে। এক মাস ধরে প্রার্থীদের আবেদন নেয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী এখন পিএসসি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করবে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এই কার্যক্রম স্থগিত আছে বলে জানা গেছে।

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.