BCS Viva Preparation Tips


BCS ভাইভা- “ড্রেস কোড, গেট আপ এন্ড কমন ম্যানার্স”
(অন্যান্য সরকারী প্রতিষ্ঠান এর জন্য দেখতে পারেন)
©রবিউল আলম লুইপা
=================================================
ভাইভা মানে আপনি নিজেকে সেল করতে যাচ্ছেন, এজন্য যেভাবে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় তা করবেন, এটা প্রত্যেকের বডি শেইপ ও টাইপ অনুযায়ী আলাদা আলাদা কৌশল হতে পারে। আপনাকে যে ড্রেস পড়লে কর্মকর্তা কর্মকর্তা লাগে সেটা পড়বেন, তবে তা অবশ্যই মার্জিত হতে হবে।
.
#ছেলেরাঃ
১) হালকা রঙয়ের যে কোন ফুল হাতা শার্ট পড়তে পারেন, তবে সাদা হলে ভালো হয়। শার্টের নীচে ঘাম প্রতিরোধ ও গায়ের শেইপ না যেন দেখা যায় সেজন্য হাফ বা ফুল হাতা গেঞ্জি পড়ে নিতে পারেন (দাদা গেঞ্জি  )।
২) প্যান্ট গাড় যে কোন রঙ হতে পারে, তবে কালো ভালো হবে। বেল্ট কালো নরমাল হতে হবে,লেদার হলে ভালো, বকলেইস না হয়ে আগের ওল্ড স্টাইল এর কাটা থাকলে ভালো। 
৩) মোজা অবশ্যই কালো এবং লং হতে হবে, ভুলেও প্রাইভেট জব স্টাইলের শর্ট শকস পড়বেন না। ভালো ব্রান্ডের হলে গন্ধ হওয়ার কোন ঝামেলা পোহাতে হবেনা। মোজা ব্যবহারের আগে তাতে কিছু টা ট্যালকম পাঊডার দিয়ে নেবেন ঘাম এবং গন্ধ প্রতিরোধের জন্য। 
৪) কালো রঙয়ের সু পড়বেন। বাটা এর ফিতা সু যেটা পিএটিসি তে ট্রেনিং এর সময় দেয়া হয়, সেটা হলে ভালো হয়। সু এর সোল রাবারের হওয়া বাঞ্ছনীয়, তাহলে ঠক ঠক শব্দ হবে না।
৫) টাই পড়ার বাধ্যবাধকতা নাই। পড়লে মেরুন অথবা নেভি ব্লু পড়বেন। সরকারী রুলস অক্টোবর থেকে মার্চ শীতকালীন ধরে স্যুট ব্যবহার করতে বলা হয়। অন্যসময় বাদ। তবে যাদের স্যুট পড়লে একটা গর্জিয়াস লুক আসে (সারা বছর আমার স্যুট লাগে  ) তাঁরা স্যুট পড়তে পারেন। 
৬) ভাইভা দেয়ার দুই সপ্তাহ আগে চুল কাটাবেন, যেন ভাইভা আসতে আসতে চুল মাঝারি শেইপ এ আসে। ভাইভা আগের রাতে সেইভ করবেন, ভুলেও ভাইভার দিন সকালে করবেন না, দেখতে বাজে লাগবে।
.
#মেয়েদের_জন্যঃ
এটা সিনিয়র আপুদের কাছ থেকে জেনে নেবেন ডিটেইলস। তবে কিছু বিষয়ে আলোকপাত করছি-
১) হালকা রঙয়ের সুতি শাড়ি পড়বেন। ব্লাউজের কলার গলা থাকবে, হাতা কোয়ার্টার বা লং হতে হবে। (ঘটি হাতা গ্রহনযোগ্য নয়  )
২) হালকা প্রসাধন থাকতে পারে, অলংকার থাকলে একদম নরমাল। 
৩) সেন্ডেল অবশ্যই পাতলা হবে, হাটার সময় যেন শব্দ না হয় সেটা খেয়াল রাখবেন অবশ্যই।
.
#ম্যানার্সঃ
ঢুকার আগে এক গ্লাস পানি খেয়ে জোরে নিশ্বাস নিবেন, এতে নার্ভাসনেস কেটে যাবে। এরপর-
১) অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করবেন, নিকটতম দূরত্বে গিয়ে সালাম বা আদাব দিবেন।
২) বসতে না বলা পর্যন্ত বসবেন না। অনেকক্ষণ হয়ে গেলে বা বসতে বলার আগেই প্রশ্ন
শুরু করলে “আমি কি বসতে পারি স্যার” বলে অনুমতি নিয়ে নেবেন, এরপর অবশ্যই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন।
৩) চেয়ারে হাতল থাকলেও হাতলে হাত রাখবেন না। পা নাচানো, বা হাতের মুদ্রাদোষ থাকলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রন করবেন। সব চেয়ে ভাল হয় দুই হাতের আঙুলগুলো ক্রস করে, উরুর উপর হাত রাখা।
৪) এক জনের উত্তর দেয়ার সময় অপরজন প্রশ্ন করে বসলে, “আমি কি স্যারের উত্তর শেষ করে আপনার উত্তর দিতে পারি?” বলে অনুমতি নিয়ে নেবেন।
৫) চলে আসার সময় অবশ্যই ধন্যবাদ দিয়ে আসবেন। চেয়ার থেকে উঠে দুই তিন স্টেপ পিছিয়ে টার্ন নিবেন। পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবেন না। বের হওয়ার সময় দরজা ঠাস করে বন্ধ করবেন না, ওই সময় টাতেই কিন্তু আপনার মার্ক লেখা হচ্ছে 
---------------------------------------------------------------------
আচরনবিধি গুলো অন্যদের কাছে অত্যন্ত নগন্য মনে হলেও, একজন ভাইভা প্রার্থীই কেবল জানেন প্রতিটি পদক্ষেপ কত গুরুত্বপূর্ণ যার উপর প্রত্যেকের গত তিন বছরের প্রিলি+রিটেন এর শ্রম অনেকটাই নির্ভর করছে। সকলের জন্য শুভকামনা 

বিসিএস ভাইভায় ভালো করতে হলে...
সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩৭তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলতি মাসের ২৯ তারিখ শুরু হবে।
এই পরীক্ষার আগে প্রস্তুতি কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন ৩৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী শাহ মো. সজীব

ক) ২০০ নম্বরের মধ্যে যদি আপনি ৫০ শতাংশ নম্বর মানে ১০০ পান তবে পাস করেছেন। এতে ক্যাডার আসবে কি না বলা যায় না। তবে নন-ক্যাডার লিস্টে নাম থাকবে আর-কি! এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, ভাইভাতে শুধু ভাইভার দিকগুলোই প্রভাব ফেলে। কারণ, লিখিতের কোনো নম্বর সামনে থাকে না।
খ) পোশাক ছেলেরা স্যুট-টাইসহ ফরমাল পরবেন। সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট উত্তম। মেয়েরা মানানসই শাড়ি পরবেন।
গ) বোর্ডের চেয়ারম্যান বা সদস্য নারী হলেও স্যার বলে সম্বোধন করবেন। আর পুরুষদের তো স্যারই বলবেন।
ঘ) আপনার গলার স্বর কখনো অধিক উচ্চ বা অধিক নিম্ন হবে না। আদর্শ মান বজায় রেখে কথা বলবেন। ৩৫তমতে এক প্রার্থী জোরে সালাম দেওয়ায় বোর্ড রেগে গিয়েছিল। আর একটা বিষয়, কথা বলার গতি খুব দ্রুত বা ধীর যেন না হয়। এতে বিরক্ত হয় অনেকে। কথার মাঝখানে অ্যা, হুম, উহ্ উচ্চারণ করা যাবে না।
ঙ) বাংলা প্রশ্ন বাংলায় উত্তর, ইংরেজি প্রশ্ন ইংরেজিতে উত্তর এবং ইংরেজি-বাংলা মিশ্রিত প্রশ্নের উত্তর মিশিয়েই দেবেন।
চ) ভাইভায় সাধারণত ছয়টি বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
যথা- (অ) নিজ জেলা
(আ) নিজ পঠিত বিষয়
(ই) মুক্তিযুদ্ধ
(ঈ) প্রথম পছন্দ
(উ) সংবিধান
(ঊ) সাম্প্রতিক বিষয়াবলি।
এই বিষয়গুলো জোর দিয়ে পড়বেন।
ছ) কিছু প্রশ্ন নিজের মতো করে ইংরেজিতে সাজিয়ে নেবেন। যেমন: নিজ পরিচয়, পরিবার, জেলা, কেন বিসিএস দিচ্ছেন, প্রথম পছন্দ এটি কেন, নিজ বিষয় ও প্রথম পছন্দের সম্পর্ক, বর্তমানে কী করেন, শখ, শৈশব, হল জীবন ইত্যাদি। তবে বলার সময় টানা মুখস্থ বলবেন না।
জ) বিপিএসসি সম্পর্কে খুব ভালো করে জেনে যাবেন। তাদের ওয়েবসাইটে সব আছে। পারলে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সম্পর্কেও ভালো করে জানবেন। তাঁদের ছবিগুলো মাঝে মাঝে দেখবেন। এতে ভয় কিছুটা কেটে যাবে।
ঝ) ভাইভা বোর্ড হলো বিনয়ের চারণভূমি। অর্থাৎ সারা জীবনের সব বিনয় এখানে এসে ঢেলে দেবেন। অহেতুক তর্ক করবেন না। কারণ, বোর্ডকে খেপালে আপনি শেষ!
ঞ) ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিক ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা থাকা চাই। মুক্তিযুদ্ধের তাত্ত্বিক দিকগুলোও একটু দেখবেন। যেমন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কী, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন কী ছিল ইত্যাদি। এ জন্য ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেনের বাংলাদেশের ইতিহাস ১৯০৫-১৯৭১ বইটি পড়া যায়।
ট) সংবিধানের তর্কিত ও আলোচিত বিষয়গুলো একটু সাজিয়ে নেবেন। যেমন: ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ থাকা উচিত কি না, রাষ্ট্রধর্ম কীভাবে দেখেন, কিছু বিষয় সংশোধন অযোগ্য কেন ইত্যাদি।
ঠ) কিছু অভ্যাস করতে পারেন।
(অ) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বা বসে কথা বলে দেখবেন বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক আছে কি না।
(আ) বাংলা ও ইংরেজি শুদ্ধ উচ্চারণ করুন।
(ই) ফরমাল পোশাক ট্রায়াল দিতে পারেন যদি অভ্যাস না থাকে। (
ঈ) নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ুন।
বিখ্যাত কিছু গ্রন্থ পড়ে নেবেন। যেমন: কারাগারের রোজনামচা ইত্যাদি।
ড) অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৭ থেকে বাছাই করে বেশ কিছু তথ্য জেনে নেবেন। এ ছাড়া সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক মাসিক ম্যাগাজিন ও পত্রিকা থেকে নিজেকে আপডেট রাখবেন। রোহিঙ্গা ইস্যু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঢ) কথা বলার সময় হাত নাড়াবেন না এবং পা ঝাঁকাবেন না। মাথা প্রয়োজন অনুযায়ী মুভ করবেন। চেয়ারে হেলান দিয়ে আরাম করে বসতে যাবেন না। চোখে চোখ করে কথা বলবেন। হাসি হাসি মুখ থাকবে।
ণ) যেদিন ভাইভা সেদিন পত্রিকা অবশ্যই পড়ে যাবেন। সম্ভব হলে তিনটা পড়বেন এবং ওই দিনের বাংলা, ইংরেজি ও আরবি তারিখ জেনে নেবেন।
ত) কিছু টপিকস ভালো করে দেখবেন। যেমন: প্রশাসনসংক্রান্ত প্রশ্ন, অর্থনীতিসংক্রান্ত প্রশ্ন, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত কবিতা ও গান, বাংলা ও ইংরেজি বানান, স্থানীয় সরকার, কিছু আইনের প্রাথমিক তথ্য, রাজনৈতিক কিছু তথ্য ইত্যাদি।
থ) বাংলাদেশ ও বিশ্ব মানচিত্র সম্পর্কে ভালো ধারণা নিয়ে যাবেন। বিশেষ করে যার আয়তন যত ছোট তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বুঝতেই পারছেন কেন!
দ) যেকোনো উত্তরের ক্ষেত্রে ইতিবাচকতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। নেতিবাচকতা অনেকেরই পছন্দ নয়।
ধ) প্রশ্নের উত্তরে কখনো এমন টার্ম ব্যবহার করবেন না, যা সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই। কারণ, বোর্ড আপনার উত্তর থেকেও প্রশ্ন বের করবে।
ন) প্রশাসন ও পুলিশ যাঁদের প্রথম পছন্দ, তাঁরা সিআরপিসি, সিপিসি, পেনাল কোড, মোবাইল কোর্ট আইন ইত্যাদি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে যাবেন।
প) ক্যাডার চয়েসের তালিকার ক্রম মনে রাখবেন। অনেক সময় কত নম্বরে কোন ক্যাডার চয়েস দিয়েছেন জিজ্ঞাসা করে।
ফ) সংবিধানের ১৫৩ অনুচ্ছেদের মধ্যে নিচের অনুচ্ছেদগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
যথা: ২(ক), ৩, ৪, ৪(ক), ৫, ৬, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৮(ক) ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৩(ক), ২৪, ২৫, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৯, ৫২, ৫৫, ৫৭, ৫৯, ৬০, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৭০, ৭৬, ৭৭, ৮১, ৮৭, ৯১, ৯৩, ৯৪, ১০২, ১০৬, ১০৮, ১১৭, ১১৮, ১২১, ১২২, ১২৩, ১২৭, ১৩৭, ১৩৮, ১৩৯, ১৪০, ১৪১, ১৪১(ক), ১৪১(খ), ১৪১(গ), ১৪২, ১৪৮, ১৫৩
ব) নিজ বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে নিজেকেই চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ বিষয়গুলোই বেশি জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে। তাই এ জন্য প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের বইগুলো একটু দেখবেন। সম্ভব হলে শিক্ষক নিবন্ধনের প্রযোজ্য গাইডটি সংগ্রহ করবেন।
ভ) অর্জিত জ্ঞান ও বলার সাহসিকতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, অনেক কিছুই আপনার হাতে নেই।
ম) ভাইভা শেষ হয়ে গেলে মনে করে আপনার কাগজগুলো ফেরত নিয়ে আসবেন। উঠে হাঁটা শুরু করবেন না।
সবার পরীক্ষা ভালো হোক।
আপনাদের সবার জন্য শুভকামনা।

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.